ইফতারে ভাজাপোড়া কম খেয়ে বিভিন্ন ফল খাওয়া উত্তম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই আপনার ইফতারে থাকতে পারে স্বাস্থ্যকর ফল নাশপাতি ও পেয়ারা। অতি পরিচিত ফল নাশপাতির পুষ্টিগুণ জেনে নিন-
নাশপাতিতে সর্বনিম্ন ক্যালোরি : স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের বড় এক ভয় ক্যালোরি। কিন্তু ফলের ক্যালোরি প্রাকৃতিক চিনি থেকেই আসে। তবু ভয় কাটে না মানুষের। এদিক থেকে পুরোপুরি নিরাপদ নাশপাতি। এটা সর্বনিম্ন ক্যালোরির ফল। রসাল একটি নাশপাতি থেকে গড়ে ১০০ ক্যালোরি মিলতে পারে, এর বেশি নয়।
শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখে : চীনে ফুসফুসের চিকিৎসায় নাশপাতি ব্যবহৃত হয়। নাশপাতির জুস গলা পিচ্ছিল করে, কফ এবং ভাইরাল সংক্রমণ কমায়। অনেকেই মনে করেন, গ্রীষ্মে প্রচ- গরমে ফুসফুসে কফ জমে। ফলে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। নাশপাতিতে এ্যান্টিঅক্সিজেন গ্লোটাথায়ন থাকার কারণে এটি গলাকে পিচ্ছিল করে এ ধরণের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
রোগ প্রতিরোধী : অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আর ভিটামিন ‘সি’-এর কারসাজিতে কিন্তু দেহের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বেড়ে যায়। এরা রক্তের শ্বেতকণিকার সংখ্যা ও কার্যক্রম বাড়ায়। এমনিতেই ঠাণ্ডা-সর্দি, ফ্লু ছাড়াও সাধারণ কিছু রোগ নাশপাতিই সামলে নিতে পারে।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের কার্যক্রম : অন্যান্য ফলের মতো নাশপাতিও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। এই উপাদানের উপকারিতার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। বিভিন্ন রোগের আক্রমণ ঠেকাতে দেহকে শক্তিশালী করে তোলে।
প্রয়োজনীয় খনিজের ঘাটতি মিটাতে : যাদের দেহে প্রয়োজনীয় খনিজের ঘাটতি রয়েছে তারা নাশপাতির শরণাপন্ন হতে পারেন। কপার ও আয়রনের জন্য এই ফল আপনার দেহের জন্য দারুণ উপকারী।
হাড়ের স্বাস্থ্য : উচ্চমাত্রার খনিজের তালিকায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম আর কপার। এসব উপাদান হাড়ের খনিজ হারানো রোধ করে। হাড়ের স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়।
স্বাস্থ্যকর ফল পেয়ারা : ইফতারে থাকতে পারে অতি পরিচিত ফল পেয়ারা। প্রতিদিন মাত্র ১টি পেয়ারা আপনার নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে- এমনটিই বলছে একাধিক গবেষণা। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রতিদিনের ইফতারে পেয়ারা রাখা যেতে পারে। এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ‘সি’ ও লাইকোপেন—যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারি। জেনে নিন তুলনামূলক সস্তার ফল পেয়ারার পুষ্টিগুণ-
* উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে : পেয়ারার পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
* দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে : পেয়ারায় রয়েছে ভিটামিন এ। দিনে ১টি পেয়ারা খেলেও দৃষ্টিশক্তির উন্নতি সম্ভব।
* ওজন কমায় : পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এতে হজমের সমস্যার সমাধান হয়। পেয়ারা রক্তের চিনির মাত্রা কমাতেও বিশেষভাবে কার্যকরী।
* চুল পড়া রোধ করে : পেয়ারার ভিটামিন সি চুল পড়া রোধে বিশেষভাবে কার্যকরী। এছাড়াও প্রতিদিন মাত্র ১টি পেয়ারা খেলে নতুন চুল গজাতেও সহায়তা করে।
* নার্ভ ও মাংসপেশি শিথিল রাখতে : পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা অনেক কঠিন পরিশ্রমের পরেও মাংসপেশি শিথিল রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও নার্ভ রিলাক্স করে।
* ত্বকের নানা সমস্যা দূর করে : পেয়ারার প্রায় ৮১% পানি। সুতরাং পেয়ারা খেলে দেহ পানি শূন্যতার হাত থেকে রক্ষা পায়, ত্বক সুস্থ থাকে। পেয়ারার ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন টিস্যুর সুরক্ষাতেও কাজ করে।
* মস্তিস্কের সুরক্ষা করে : পেয়ারা আমাদের মস্তিষ্ক সুরক্ষায় কাজ করে। পেয়ারার ভিটামিন মস্তিস্কের নার্ভ রিলাক্স করতে সহায়তা করে। এতে মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।